Friday, May 28, 2021

Has Kolkata TV's Suchandrima stopped flooding the streets with her tears?


Cyclone Yaas has made a landfall and gone. Has Kolkata TV's Suchandrima stopped flooding the streets with her tears? 

কলকাতা টি ভি র সুচন্দ্রিমা কান্না কি থামিয়েছে ? 
ঝড় তো থেমে গেছে । ইয়াস বাংলা বাইপাস করেছে । via বালাসোর ধামরা হয়ে ঝারখন্ড চলে গেছে অনেকক্ষন । সুচন্দ্রিমা তারপরও কি কাঁদছে ?  
আলোচনা চলছে এই নিয়ে, শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় নয়, সংবাদ মাধ্যমেও । কেন না ,'একটা কান্না' সব ক' টা সংবাদ মাধ্যমের বাচ্চা বাচ্চা রিপোর্টারদের দিন ভোর লড়াইটাকে প্রায় বৃথা করে দিয়ে গেল । সবাইয়ের মন এখনো ঘুরে ফিরে সুচন্দ্রিমার কান্না নিয়ে । কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন কান্নাটা কি গাড়ি ভেসে যাওয়ার জন্য ? কেউ বলছেন - বসের নজর টানার জন্য । আবার কেউ বলছেন কান্নাটা একটু অল্প সময়ের করলে বিশ্বাসযোগ্য হত । কেমন যেন জোর করে কান্না মনে হচ্ছিল ! 
যারা বলছেন তারা আসলে হিংসে করছেন ওঁর টি আর পি টাকে । তিন ঘণ্টায় সাড়ে চার লাখ দর্শক টেনেছে ওই জগৎ ভোলানো টেনে টেনে কান্নাটা । যেখানে বাকিরা বাচ্চা থেকেছে । জি ২৪ এর এক রিপোর্টার কনুইয়ের ওপর ব্যাঙ নিয়ে কি না করলেন । বেশ লাগছিল । নিউজ ১৮ এর আরেক জন তো হাঁটুর নিচে জলে সাঁতার কাটালেন দুই সমাজ কর্মীকে দিয়ে । সবই টি আর পি র দৌড় আর কি ! সংবাদপত্রের মালিকরা দিনের শেষে হিসেব বোঝেন, সম্পাদকরা হিসেব বোঝান, অধস্তনরা তাই বেপরোয়া । বোঝেন না এইসব করতে গিয়ে বিশ্বাস যোগ্যতা কতটা হারিয়ে ফেলেন এঁরা ! 
এই সবের মধ্যে একটা কিন্তু লাভ আছে । এই কে কাকে টেক্কা দেওয়ার লড়াইয়ে লাভ হয় দর্শকের । ড্রয়িং রুমে বসে এসব দেখে হাসেন অনেকে, কিন্তু চুটিয়ে দেখে নেন শেষ পর্যন্ত সবটা । 
আর লোকে গোগ্রাসে গেলে বলে কি সুন্দর সর্বাধিক প্রচারিত চ্যানেলটি আজ ২০১৬ র পশ্চিম উরুগুয়ের ডোলেরেসের ঝড়ের ভিডিওটা বালাসোরের ইয়াস বলে চালিয়ে দিল ! আর তারপর সব দোষ বাচ্চা বাচ্চা রিপোর্টার গুলোর ? বুড়ো খোকারা নিউজ রুমে বসে ফেক ভিডিও ছাড়লে সেটা দোষ নয়  ? 
বুক সমান জলে দাঁড়িয়ে টিভি নাইনের সৌমেন মন্ডল যখন গঙ্গা সাগরে কপিল মুনির আশ্রমের সামনে লাইভ কভারেজ দিচ্ছেন তখন একবারও কেউ আমরা ভেবে দেখেছি ছেলেটার পরিবার আছে ? কেউ ভেবেছি বালাসোরে ঝড়ের মধ্যে দাঁড়ানো সিজার মন্ডলদের কথা ? এঁরা প্রত্যেকে বাড়িতে পরিবার রেখে আমাদের চোখের খিদে মেটাতে গেছে । প্রায় প্রত্যেকটা চ্যানেলের বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়ে গুলো দিন ভোর লড়াই করে টি আর পি বাড়ানোর লড়াই লড়েছে । কেউ কেউ অতি উৎসাহী হয়ে কিছু ভুল করেছে, বেশী কেঁদেছে । কিন্তু ফ্রন্ট লাইনে দাঁড়িয়ে লড়েছে তো ?
আর তারপর কেউ আমরা কখনো খবর রেখেছি যে ছেলে মেয়ে গুলো অধিকাংশই দিনের শেষে অফিসের contractual কর্মী ? একটা ভুল হলে শুনতে হবে - "কাল থেকে এসোনা" । পড়াশুনা শিখে একটা নেশায়, একটা প্যাসানে সাংবাদিক হতে চেয়েছে এরা । রিপোর্টার হতে চেয়েছে এরা ।  ভুল তো করেনি । 
ভুলটা তো এই সমাজের । বাধ্য করেনি সমাজ ব্যবস্থাটাকে বাধ্য করতে - তুমি কারুর জীবন নিয়ে, কেরিয়ার নিয়ে খেলতে পারনা । কখনোই পারো না । তোমার মাথায় যাঁর হাতই থাকুক না কেন । 
২০২০ তে এক সকালের একটা নোটিশে এ ভাবে আনন্দবাজারে ৩৭৬ জনের কাজ চলে গিয়েছিল । তার মধ্যে সাংবাদিক হওয়ার নেশায় কত তরুণের জীবনের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে কেউ খবর রেখেছি আমরা ? এই সমাজ ? - যারা আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ছেলেমেয়ে গুলোকে নিয়ে ট্রোল করছি ? 
যারা আজ বলছেন সব প্রমোশন আর বোনাসের দৌড়, জেনে রাখুন এই  কান্না আর বুক সমান জলে দাঁড়িয়ে লাইভ কভারেজ দেওয়া ছেলে মেয়েগুলো এক এক জন স্বপ্নের সেলসম্যান । সাংবাদিকতার পেশাতে না এলে এরা কেউ অধ্যাপক, কিংবা সরকারি আমলা হতে পারত । হয়নি স্বপ্ন ফেরি করতে গিয়ে । সেই দুর্বলতায় মালিকরা এঁদের ব্যবহার করেন । আর মুনাফায় ঘাটতি হলে ছুঁড়ে ফেলতেও কালক্ষেপ করেন না । তবু এঁরা সব জেনেও আজ কোমর সমান জলে নেমেছিলেন আমাদের চোখের খিদে মেটাতে ।
জলে ভেসে গেলে সংবাদ মাধ্যমের মালিকরা এঁদের ক্ষতিপূরণ দিতেন । আমরা আহা তু তু করতাম । তারপর কালের গতিপথে বিস্মৃত হতেন এঁরা । এঁদের নাম গুলো ।
তাই এঁদের ভুলটাকে নিয়ে ট্রোল নয়, লড়াইটাকে কুর্ণিশ করুন । একটু বাড়তি কান্না, একটু বাড়তি আবেগ, একটু বাড়ানো রিপোর্টিং থাকলই বা । ইয়াস আমাদের যতটা দেবে ভেবেছিলাম দেয়নি । এঁরা তো দিলেন । এভাবেই নয় ভাবুন না । ক্ষতি কি !!

সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় ( ৯৮৩০৪২৬০৭৮) 
* How India Travels

No comments: